প্রকাশিত: / বার পড়া হয়েছে
সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী সকল ছাত্রদের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর। শনিবার (১ মার্চ) বিজয়নগর আল রাজি কমপ্লেক্সে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
নুর বলেন, যেহেতু আন্দোলনের পরিচিত মুখ থেকে সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করেছে সেহেতু সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা ও জনগণসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আস্থা ধরে রাখতে সরকারে থাকা অন্য দুই ছাত্র উপদেষ্টাসহ (আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম) সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী সকল ছাত্রদের পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেড় দশকের ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও আগামীর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনদের নিয়ে একটি অর্ন্তভুক্তিমূলক জাতীয় সরকার গঠনের জনআকাঙ্খা তৈরি হলেও দেশি-বিদেশি অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের কারণে সেটি হয়নি। একটি নির্দিষ্ট বলয় কেন্দ্রিক সরকার গঠিত হয়েছে। যার ফলে গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছিলো আজ তাতে ফাটল ধরেছে, বিভাজনের সৃষ্টি হয়েছে। যা এই মুহূর্তে জাতির জন্য কোনোভাবেই কাম্য ছিল না।
গণঅধিকার পরিষদের শীর্ষ এই নেতা বলেন, এ অবস্থায় সরকারের থাকা ৩ ছাত্র উপদেষ্টাদের মধ্যে ১ জন পদত্যাগ করে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। তারুণ্যের রাজনৈতিক দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদ রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণকে সবসময় উৎসাহিত করে, নতুন দলকে স্বাগত জানায়। তবে গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গুটি কয়েক ছাত্রনেতা সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় অযাচিত হস্তক্ষেপে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ জনগণের মধ্যে একটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।
গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রিক নতুন রাজনীতি ও নতুন বাংলাদে শ বিনির্মাণে যে জনআকাঙ্খা তৈরি হয়েছে তার বাস্তবায়নে রাষ্ট্র ও রাজনীতির সংস্কার জরুরি বলে উল্লেখ করে নুর বলেন, আন্দোলন কেন্দ্রিক সেন্টিমিটারের জায়গায় থেকেও ছাত্রনেতৃবৃন্দ যদিও পুরোনো পথেই হাঁটে সেটি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য গত ৬ মাস সেটিই অবলোকন করা গেছে। আন্দোলন কেন্দ্রিক পরিচিত ছাত্রনেতৃবৃন্দের তদবির, নিয়োগ, টেন্ডার বাণিজ্যসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অসংখ্য ঘটনা ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানেও জেলা প্রশাসকের নোটিশে ঢাকার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের মতো বিষয় দেখা গেছে, গাড়ি সরবরাহে মালিক সমিতি ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের উপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অগ্রহণযোগ্য। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন বা জুলাই গণঅভ্যুত্থান কোনো একক সংগঠন বা নেতৃবৃন্দের দ্বারা সংগঠিত হয়নি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সময়োপযোগী পদক্ষেপ, ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়। কাজেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের আওয়ামী চেতনার বয়ানের মতো কোনো অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক ন্যারেটিভ তৈরি না করতে সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ফারুক হাসান, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ফাতিমা তাসনীম, জসিম উদ্দিন আকাশ, মাহফুজুর রহমান খান প্রমুখ।